Want to raise a happy & healthy Baby?
Preparing For Delivery
4 April 2023 আপডেট করা হয়েছে
আর্যরা উত্তর ভারত জয় করেছিল যে সময়, সেই সময়ে কিছু মানুষকে দমিয়ে ক্রীতদাসে পরিণত করা হয়েছিল এবং কিছু বিন্ধু অঞ্চলে পালিয়ে গিয়েছিল, আবার কিছু পালিয়ে যাওয়া মানুষের মধ্যে ধরা পড়া অংশ দাসে পরিণত হয়েছিল। সমৃদ্ধ শ্রেণী দাসদের ব্যবহার করতেন গৃহকর্মে কিন্তু সামাজিক উৎপাদন মূলক কাজে নয়। যেহেতু গৃহ কাজের অনেকটা অংশই দাসীদের হাতে থাকতো তাই সেই সব গৃহের নারীরা সব রকম উৎপাদনমূলক কাজ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়তো এবং নিষ্প্রয়োজন হয়ে দাঁড়াতো যার ফলে একমাত্র সামাজিক প্রয়োজনীয়তা তাদের ক্ষেত্রে হয়ে দাঁড়ালো সন্তানের জন্ম দেওয়া যেহেতু এটি প্রাচীনকাল থেকেই সামাজিক উৎপাদন মূলক ছিল।
পুরুষকূল শুধুমাত্র সমাজ শাসন করতো তা নয় অর্থনীতির নিয়ন্ত্রণ করত এবং সমাজের বিভিন্ন অংশের ভূমিকা ও ঠিক করতো। নারীর প্রধান কাজ যেহেতু হয়ে দাঁড়ালো সন্তান ধারণ তাই তারা যন্ত্রণার ভাগীদার হলো এবং সামান্য ক্ষতিপূরণ বা সম্মান এর পরিবর্তে পেতেন। অধিকাংশ নারীর কাছেই মাতৃত্ব ছিল বঞ্চনা ও যন্ত্রণার প্রতীক কারণ পিতৃতান্ত্রিক সমাজে পুরুষের নিয়ন্ত্রণ ছিল সর্বাপেক্ষা বৈচিত্র্যময় এবং এটি নারীর বন্দিত্বই প্রকাশ করে।
প্রাচীন বাংলার মাতৃত্ব ছিল বিকল্পহীন ট্রাজেডি কারণ সব ক্ষেত্রেই নারীর উপর জোর খাটানো হতো। এই জোর আসত রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক শক্তির সম্মিলিত রূপ হিসেবে যাতে নারীর কোন নিয়ন্ত্রণ ছিল না। এর দ্বারা পুরুষ সব রকম ভাবেই লাভবান হচ্ছিল এবং নারীর সমানভাবে ক্ষতি হচ্ছিল। মাতৃত্ব যে এক আনন্দের সময় ও অবস্থা তা কখনোই পরিস্ফুটে হচ্ছিল না কারণ এক্ষেত্রে নারীর নিজের চাহিদা, গর্ভধারণ বা প্রসবের ক্ষেত্রে কোন রকম মতামত থাকত না। প্রাচীন বাংলায় সন্তানের উপর দুজনের অধিকার। কন্যা সন্তানও পুত্র সন্তানের মতনই এবং এই সময় আনন্দদায়ক ও সুখকর এসব ভাবনা সম্পূর্ণরূপই কাল্পনিক ছিল এ সময় নারীর একমাত্র প্রার্থনা ছিল তার উর্বরতা যাতে সে গর্ব করতে পারে এবং এই ক্ষমতা যে কোন প্রাণীরই থাকতো; কিন্তু এই পুরো মাতৃত্বের সময়ে যন্ত্রণার জন্য সে কোন রকম স্বীকৃতি পেত না। তার স্বপ্ন আশা-আকাঙ্ক্ষা আনন্দ সবটাই শিশুর মধ্যেই সীমাবদ্ধ তার সাবালক হয়ে ওঠা পর্যন্ত। সন্তানের আনার সময় নির্ধারণ করার ক্ষেত্রে তার কোনই যোগদান থাকত না; এরপরে শিশুর শিক্ষাদান বা মানসিক লালন-পালনেও সে বঞ্চিত থাকতো তাই নারীর একমাত্র পরিচয় ছিল গর্ভধারণের যন্ত্র হিসেবে। পুরুষতান্ত্রিক শাসনই নারীর সব রকম স্বাধীনতা কেড়ে নিয়েছিল তাই তাকে এমন উপাদানে পরিণত করা হয়েছিল যাতে সে গর্ভাবস্থার কোন আনন্দ উপভোগ করতে না পারে; যদিও এ কথা সর্বাংশে সঠিক নয় কিন্তু পুরান ও মহাকাব্যে বহু অনচ্ছুক নারীকেই পুরুষের যথেচ্ছ ব্যবহার অসহায় ভাবে মেনে নিতে হতো এবং এক্ষেত্রে মাতৃত্ব খুব সহজভাবেই বোঝা স্বরূপ হয়ে উঠতো। দুইয়ের সম্মতিতে প্রাণ সৃষ্টি, সন্তানের লালন পালন, সমস্যা দুজনের মধ্যে ভাগ করে নেওয়া, দুজনে মিলে সবরকম বাধা পেরোনো - এসব সেসময় ছিল না। শৈশবে শিশুরা মায়েদের কাছে থাকতো, বাবারা জীবিকা নিয়ে ব্যস্ত থাকতো। তাই সন্তানরা মাকে ঘনিষ্ঠভাবে চিনতে শিখত; কিন্তু যে মুহূর্তে সন্তানের শারীরিক প্রয়োজন মায়ের উপর আর নির্ভর করত না তখন থেকেই সে পিতার উত্তরাধিকারী এবং কন্যার ক্ষেত্রে তাকে বিয়ের জন্য প্রস্তুত করা হতো। এই অবস্থায় একজন মা সম্পূর্ণ রূপে একা হয়ে যেত যদি না সে আবার গর্ভধারণ করত যা কিনা সে সময় খুবই নিত্যনৈমিত্তিক ব্যাপার ছিল। এরপর একটা সময়ে পরপর সন্তান ধারণের ফলে নারীর রূপ ও যৌবন চলে যেত এবং সে সময় তার স্বামী আরো সুন্দরী, তরুণী কোন নারীকে স্ত্রী রূপে ঘরে নিয়ে আসতেন স্বামীকে খুশি করার জন্য এবং সন্তান ধারণের জন্য। পুত্র সন্তান এ সময় থেকেই এ অভ্যেসে অভ্যস্ত হতে থাকতো এবং মায়েরা বুঝতে শুরু করত যে মা হওয়ার ফলে কোন মানসিক নিরাপত্তা আসেনা। নারী শুধুমাত্র সন্তান জন্মের এক যন্ত্র। তাকে কার্যসিদ্ধি করে ত্যাগ করা যায় কারণ সে সময় সে সন্তান ধারণে অক্ষম। তাই মাতৃত্ব শুধুমাত্র শারীরিক যন্ত্রণা নিয়ে আসতো তাই নয় বরং মানসিক যন্ত্রণা, অনিরাপত্তা, উদ্বেগ, সংশয় ইত্যাদিও বহন করতো। নারীকে খাওয়া পড়া আশ্রয় দেওয়া হতো এবং কোন স্খলন হলে পুত্র প্রায়শ্চিত্ত করতো এবং প্রার্থনা করতো। বাবার মৃত্যুর পর পুত্রেরাই মায়ের ভরণপোষণের দায়িত্ব নিত। কিন্তু সামাজিক সম্মান সে খুব অল্পই পেতো সেটা স্বামীর জীবদ্দশাতেই হোক বা পরবর্তীকালেই হোক। তাই পরবর্তীকালেও এ অবস্থার মধ্যে হতো না এবং এটি বাঙালি সমাজের মাতৃত্বে ব্যঙ্গ রূপে ধরা পড়ে। খুব ছোট বয়স থেকেই একটি মেয়েকে এই সামাজিক শিক্ষায় বড় করে তোলা হতো যে তার একমাত্র কাজ মাতৃত্ব।
কৃষিকাজের ক্ষেত্রে যেমন খেতে লাঙ্গল চাষার ব্যাপার থাকে ঠিক সেরকমই বাঙালি প্রথায় সীমন্তনয়ন অনুসরণ ইত্যাদিও আছে কিন্তু দুর্ভাগ্যের বিষয় কোন অনুষ্ঠানে গর্ভবতী নারীর দীর্ঘ জীবন, সুখ, বা সুস্বাস্থ্যের প্রার্থনা করা হয় না বরং সব প্রার্থনাই করা হয় বাবার জন্য যার এসবের কোনই দরকার নেই অথবা ভ্রূণের জন্য যদিও ভ্রূণের ক্ষেত্রে এসবের দরকার অবশ্যই আছে কিন্তু সব ক্ষেত্রেই মা সব সময় অনুচ্চারিতই থেকে যায়; মা হয়ে যায় শুধু গর্ভধারণের যন্ত্র তার বেশিও নয় কমও নয়। একটি শিশুর জন্মের জন্য মায়ের দরকার কিন্তু শিশুটি তার পিতার অধীনে থাকত; মায়ের অবদান তাই সম্পূর্ণই অবজ্ঞাত এবং মানসিক বৃদ্ধির বিষয়েও মায়ের কোন অবদান স্বীকৃত নয়. তাই শিশুর সঙ্গে মানসিক যোগসূত্র সেসময়ের বাঙালি সমাজ স্বীকার করত না. নবজাতকের ওপর সবটুকু অধিকারী, তার বাবার এরকমই মনে করা হতো। নারী শুধু ফসল উৎপাদনের জন্য, কিন্তু তা ভোগের জন্য না। ঠিক সেরকমই মায়ের দায়িত্ব শুধু সন্তানের জন্ম দেওয়া সন্তান জন্ম হওয়ার পরে তাই তার অস্তিত্বের কোন প্রয়োজন নেই।
এক্ষেত্রে দুটি ভাগ গত ব্যাখ্যা খুবই জরুরী - একটি হলো মা হাজারজন বাবার সমান কারণ শারীরিক প্রক্রিয়া ছাড়া বা মায়ের অনুপস্থিতিতে বাবা পুত্রকে সন্তান হিসেবে পায় না তাই এটি শুধুমাত্র স্তুতি বা ক্ষতিপূরণ আবার এ কথাও বলা হয় মায়ের প্রতি ভক্তির মাধ্যমে পুত্র পৃথিবী লাভ করে আর পিতার প্রতি ভক্তির মাধ্যমে স্বর্গ লাভ। এর দ্বারাই সামাজিক অবস্থানে বাবা এবং মায়ের পার্থক্য পরিষ্কারভাবে বোঝা যায় এছাড়া মায়ের থেকে বাবাকে উচ্চাসনে বসাবার আর্থসামাজিক প্রয়োজনটাও পরিষ্কার হয়ে যায়।
দ্বিতীয় পার্থক্য হল মাতৃকাদের অস্তিত্ব। এদের অস্তিত্ব সৃষ্টি করে সমাজ মায়েদের সামাজিক বিরম্বনার ক্ষতিপূরণ করার চেষ্টা করে। মাতৃকাদের অধিকাংশেরই সন্তান আছে। যদিও উপকাহিনীতে মা ও শিশুর রূপ খুব একটা দেখানো হয়নি কেবলমাত্র বিশেষ কয়েকটি মূর্তি বা ছবি ছাড়া। মাতৃকারা সর্বশক্তিমান এবং পশুর দমনে শ্রেষ্ঠ, অশুভ শক্তিকে বিনাশ করার জন্য। স্তত্রের দ্বারা তাদের শ্রুতি করা হয় সন্তানের রক্ষার্থে। বিপন্ন কেউ যখন তাদের কাছে আসেন তারা আর্তি দূর করে বর দেন। বর এবং অভিশাপ দুই তারা ইচ্ছামূলক উক্তির দ্বারা দিতে পারেন এবং এখানে তারা সাধারণ মায়ের থেকে ভিন্ন কারণ সাধারণ মায়েদের ইচ্ছার কোন ফল নেই এবং সন্তানের জন্য তারা যা চান তা অনেক সময় ঘটে না। মাতৃকারা অন্যদিকে স্বাধীন, মুক্ত; যদিও মায়েরা শশুর শাশুড়ি, গুরুজন,স্বামী এবং পরবর্তীকালে পুত্রের অধীন তাই সাধারণ মায়েদের কোনই ক্ষমতা নেই কিন্তু বাঙালি সমাজে মাতৃকাদের এক বিশেষ জায়গা দেওয়া হয়েছে। মাকে উচ্চাসনে প্রতিষ্ঠিত করার জন্য এবং মাতৃত্বের ভাবনাকে আরো মহান রূপে দেখাবার জন্য যেখানে মা প্রলয় রোধ করেন, অসুর দমন করেন।
এর মূল কল্পনাটি গৃহীত হয়েছে সাংখ্য দর্শন থেকে যেখানে পুরুষ সম্পূর্ণভাবে নিষ্ক্রিয় থেকে সঙ্গিনী প্রকৃতিকে দিয়ে কাজ করায়। তন্ত্রে এই দর্শন আরো কয়েক ধাপ এগিয়ে গেছে। যেখানে শক্তি উল্লেখযোগ্য ভাবে শক্তিময় দেবী হয়ে উঠেছে। তাদের উন্নয়ন এবং সাধারণ মায়েদের অবস্থার ক্রমাগত অবনমন ইতিহাসে খুবই পরিস্ফুট। সমাজে নারীর অবস্থান প্রত্যেকটি ক্ষেত্রেই যেমন দায়িত্বশীল মা হিসাবে, সহযোগী হিসাবে, সন্তানের লালন পালনে তার ভূমিকার দিক দিয়ে নিচে নেমে গেছে - জন্ম দেয়, তারপর শিশুকে স্তন্যদান করায়, ঘুম পাড়ায়, কাপড় বদলায়, খাওয়ায় এবং অন্যান্য জাগতিক শারীরিক প্রয়োজনও মেটায়, রোগের সেবা করে কিন্তু এই ধরনের শ্রম সাপেক্ষ শারীরিক কাজগুলোর ক্ষেত্রে মাতৃকারা পুরোপুরি ভাবে মুক্ত। পরবর্তীকালে যখন সন্তানের ভালো মন্দের দায়িত্ব বাবা নিয়ে নেয় তখনও মা নিরব দর্শক থাকে। শুধুমাত্র আনুষ্ঠানিক সম্মান, দরকারে নাতি নাতনির দেখাশোনা, এবং বার্ধক্যয় ভরণ পোষণ এটুকুই তার অধিকারের মধ্যে পড়ে। কিন্তু মাতৃকারা সব সময় সম্মান এবং পূজার অধিকারীনি কারণ তারা বিপদের সময় শক্তিময়ী রূপে আবিভূত হন। তাই ধারণা করা হয় তারা দুর্যোগের সময় সক্রিয়; অনেক সময় এও দেখা যায় পুরুষ দেবতারাও যে প্রলয়ের বিরুদ্ধে অসমর্থ হন সেখানে মাতৃকারা সফল। কিন্তু মনে রাখতে হবে মাতৃকা মূর্তি সাধারণ মায়ের সঙ্গে কখনোই মিলবে না কারণ একজন মা শুধুমাত্র সাংসারিক ক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠিত - যেখানে সব, অধিকার সিদ্ধান্তই বাবার ওপর থাকে এমনকি সন্তানদের ক্ষেত্রেও সে নিজের অধিকার স্থাপন করতে পারেনা; কিন্তু মাতৃকা সৃজনশীল এবং পূজনীয়। সাধারণ মা ছেলে মেয়ে বড় হয়ে গেলে যখন ছেলেমেয়েদের দেখাশোনার আর দরকার পড়ে না, তখন সম্পূর্ণরূপে একা হয়ে যায় কিন্তু মাতৃকাদের উপস্থিতি সবসময়ই উজ্জ্বল থাকে।
Yes
No
Written by
Atreyee Mukherjee
গর্ভাবস্থায় সবেদা খাওয়া কি উচিত?
বাঙালি সংস্কৃতিতে মাতৃত্ব
বাঙালি লোক কাহিনীতে মাতৃত্ব
প্রাচীন বাংলায় মাতৃত্ব
বাঙালি লোকাচারে সন্তান এবং মাতৃত্ব
শিশুর মুখের ক্ষত বা মাউথ থ্রাশ
At Mylo, we help young parents raise happy and healthy families with our innovative new-age solutions:
Chamomile | Shatavari | Ashwagandha | Myo-inositol | Skin - Pregnancy & New Mom | By Concern | Stretch Marks Cream | Maternity Wear | Lactation | Maternity Gear | Shop By Ingredient | Dhanwantaram | Shea Butter | Skin - Daily Wellness | By Concern | Digestive Health | Immunity | By Ingredient | Saffron | Wheatgrass | Cloth Diaper | Maternity dresses | Stretch Marks Kit | Stroller |